স্বর্ণপদক, আসলে কিন্তু অলিম্পিকের পদক সোনা দিয়ে তৈরি হয় না।
এক সময়ে যদিও হত! সে অবশ্য ঢের আগের কথা, সেই ১৯১২ সালে স্টকহোমে যখন সামার অলিম্পিকের আসর বসেছিল, সেই বছরেই শেষ বিতরণ করা হয়েছিল খাঁটি সোনার পদক! পরের বছর থেকে চকচক করলেই সোনা হয় না প্রবাদটা মাথায় রাখার সময় এসে গেল! তবে যতই যা হোক, আদতে প্রতিযোগিতার নাম অলিম্পিক, ফলে সেখানে সোনার জল করা পদক দিলেও তা হেলাফেলার জিনিস নয়, বিশ্বদরবারে সংশ্লিষ্ট দেশের পারদর্শিতার সাক্ষাৎ প্রমাণ সেটা! পাশাপাশি, আরও কোন দিক থেকে অভিনব, জেনে নেওয়া যাক এক এক করে!
১. ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটি, সংক্ষেপে IOC নির্ধারিত নিয়ম অনুসারে স্বর্ণপদকে ১ গ্রাম সোনা রাখতেই হয়। এগুলোর ব্যাস হয় ৬০ মলিমিটার এবং বেধ হয় ৩ মিলিমিটার।
২. পদকের এক পাশে থাকে গ্রিকদের বিজয়ের দেবী নাইকির ছবি, ১৮৯৬ সালে প্রথম যে স্টেডিয়ামে অলিম্পিকের আসর বসেছিল, সেই প্যানাথেনাইক স্টেডিয়ামের ছবি থাকাটাও বাধ্যতামূলক। বাদ দেওয়া যাবে না অলিম্পিকের পাঁচ রিংয়ের অফিসিয়াল লোগো। গেমের নামের সঙ্গে থাকে যেখানে অলিম্পিকের খেলা হচ্ছে সেই শহরের নাম।
৩. টোকিও অলিম্পিকে যে পদক দেওয়া হচ্ছে, তা প্রযুক্তিগত দিক থেকে সারা বিশ্বে উৎকর্ষতার নজির তৈরি করেছে। প্রযুক্তিগত দিক থেকে বরাবরই অন্য সব দেশকে টেক্কা দেয় জাপান। ফলে, এবারে পদক তৈরিতেও তারা সেই সুনাম অক্ষুণ্ণ রেখেছে। জানা গিয়েছে যে পুরনো বৈদ্যুতিন জিনিস গলিয়ে তা থেকে ক্ষতিকর উপাদানগুলো ছ্ঁটে ফেলে বাকিটুকু দিয়ে পাথরের মতো একধরনের উপাদান তৈরি করা হয়েছে।
সেই পরিবেশবান্ধব উপাদান দিয়েই তৈরি হয়েছে টোকিও অলিম্পিকের পদক। এই কাজে দেশের অধিবাসীরা নিজেদের পুরনো বৈদ্যুতিন জিনিস তুলে দিয়েছেন সরকারের হাতে অকাতরে, এই ভাবে দেশের প্রতিটি অধিবাসীর দানে অধিক সম্মানিত হয়ে উঠেছেন প্রতিযোগীরা।
৪. টোকিও অলিম্পিকের পদক তৈরির এই যে উপাদান, তার আরেকটি বৈশিষ্ট্যও আছে। এটি যেমন হালকা, তেমনই চকচকে। দাবি করা হয়েছে যে এই উজ্জ্বলতা কখনই ম্লান হয়ে যাবে না। যা প্রতিযোগীর অম্লান দক্ষতার পরিচয় বহন করবে। চমক রয়েছে পদকের ফিতেতেও, এটাকেও এক রকমের গ্যাজেট বলতে হয়।
জাপানের ঐতিহ্যবাহী নকশাখচিত এই ফিতেয় ব্যবহার করা হয়েছে সিলিকন, পদক স্পর্শ করলেই সই ফিতে জানিয়ে দেবে তা কীসের- সোনা, রুপো না ব্রোঞ্জের!
0 মন্তব্যসমূহ